অপরাজিতা তুমি

করোনা কালীন সময়ে বাচ্চাদের ঘরে ব্যস্ত রাখার ৭টি উপায়

বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস ক্রাইসিসের কারণে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা আছে সেই কবে থেকেই,কেননা করোনা যেনো থামার নামই নিচ্ছে না ,দিন দিন বেড়েই চলছে কিন্তু এবং বাচ্চাদের বাইরে বের হতে ও অন্য কোন বাচ্চাদের সঙ্গে মিশতে বারণ করা হয়েছে। কিন্তু সময় যত বাড়ছে তাদের ঘরে থাকার ইচ্ছা ততটাই কমে যাচ্ছে কোনো মতই তাদের বুঝানো যাচ্ছে না, এই সময়ে বাচ্চাদের ঘরে রাখা এবং গঠনমূলক কাজ করানো ও ক্রিয়েটিভ কিছু শেখানো বাবা – মায়েদের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে মায়ে জন্য একটি বিশেষ ভূমিকা পালনের ব্যাপার। বাড়িতে বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখা নিয়ে আজ তাই ৭টি উপায় আলোচনা করবো। চলুন তবে জেনে এমন কিছু যা তাদের ভবিষ্যৎ এ কাজে লাগবে!

১: ক্রাফটিং বা কারুশিল্প:

বাচ্চারা নতুন কিছু করতে পছন্দ করে এবং নতুন কিছু প্রতি তাদের আকর্ষণ বেশী থাকে

ক্রাফটিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে আপনার বাচ্চা সৃজনশীল কিছু শিখতে পারবে এবং এর মাধ্যমে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত ব্যস্ত থাকবে। রঙিন পেপার, সুতা বা কাপড়, রঙ ইত্যাদি দিয়ে বিভিন্ন ক্রাফট এর কাজ করা যায়। আপনি যেগুলো নিজে বানাতে পারেন সেগুলো আপনার বাচ্চাকে আগে শেখাতে পারেন এমনকি চাইলে ইউটিউবে অনলাইনে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল পাওয়া যায় সেগুলোর হেল্প নিতে পারেন। কিছু জনপ্রিয় ক্রাফট যেমন নৌকা, প্লেন, কাগজের বিভিন্ন ধরনের ফুল, সুতার বল ইত্যাদি। এমনকি বাচ্চারা বন্ধুদের পাঠানোর জন্য বিভিন্ন গ্রেটিং কার্ডস ও বানাতে পারে। তারপর সেগুলো ছবি তুলে তাদের বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করে আরো আনন্দিত হতে পারে এবং অন্যদের উৎসাহিত করতে পারে।

২: বাচ্চাদের প্র্যাকটিক্যাল মনোভাব গড়ে তুলুন:

বাচ্চাদের গঠনমূলকভাবে গড়ে তোলার জন্য এই অবসর সময়টি একটি দারুণ উপযুক্ত সময়। আপনি এই সময়টিকে কাজে লাগিয়ে তাদের অনেক মুল্যবান জিনিস শেখাতে পারেন। তাদেরকে আপনার বাড়ির কাজগুলোতে সাহায্য করার কথা বলতে পারেন। ঘরের টুকিটাকি জিনিস গোছানোর ব্যপারে আপনাকে সাহায্য করতে বলতে পারেন। আপনি কখন কী করবেন না, আর করবেন তার একটি লিস্টও তাদের দিয়ে তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। এতে তাদের মনোবল বৃদ্ধি পাবে এবং তারা তাদের নিজেদেরকে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে মনে করবে।

৩: মাইন্ডফুল ইনডোর গেমস:

বাচ্চাদের বিভিন্ন ইনডোর গেইম এ ব্যস্ত রাখতে পারেন আর খেলাগুলো যদি শিক্ষণীয় হয় তাহলে তো আরো ভালো। ছোট বাচ্চাদের জন্য –

১. বিভিন্ন অক্ষর দিয়ে শব্দ এবং শব্দ দিয়ে বাক্য বানানো

২. বিভিন্ন দেশ, ফুল, ফল, পশু,পাখি ইত্যাদির নাম বলতে বা লিখতে বলা

৩. চোখ বেঁধে কোন জিনিসের আকার বা আকৃতি সম্পর্কে বলতে বলা

৪. বাড়ির যে কোন জিনিস সম্পর্কে তার অনুভূতি জানতে চাওয়া

৫. নতুন নতুন টপিক দিয়ে ঐ সম্পর্কে তাকে কোন গল্প লিখতে বা বলতে বলা ইত্যাদি বিভিন্ন মননশীল খেলার আওতাভুক্ত

 

এছাড়াও স্কুল গোয়িং বাচ্চাদের জন্য এনাটমি, ওয়ার্ল্ড গভার্মেন্ট, বিদেশি ভাষা, ইতিহাস ইত্যাদি সম্পর্কীয় খেলা তাদের সাথে খেলতে পারেন, খেলার পাশাপাশি অনেক কিছু শেখাও হয়ে যাবে এই ফাঁকে।

৪: রান্না শেখা

রান্নার সময় আপনার বাচ্চাকে রান্নার বিভিন্ন টুকিটাকি কাজে আপনাকে সহায়তা করতে উৎসাহিত করুন। বিভিন্ন রান্নার সময় তাদের কুকিং ও বেকিং দুটোতেই ব্যস্ত রাখতে পারেন। তাদের রান্নার অনেক স্কিল শেখানোর পাশাপাশি কোন রান্নায় কতটুকু ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহৃত হচ্ছে এবং পরিমানে কতটুকু লাগছে সেগুলো তাকে পরিমাপ করে দিতে বলুন। বেকিং টাইপের রান্নায় তাদের উপাদানগুলো মিক্স করে দিতে বলুন। এইসব বিভিন্ন রান্নার কাজে মনোনিবেশ করলে বাচ্চাদের মাইন্ড ফ্রেশ থাকবে এবং বিভিন্ন স্ট্রেসফুল চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকবে।

৫: লেখার অনুশীলন

রাইটিং হলো একটি দক্ষতা যা আপনার বাচ্চারা তাদের জীবন জুড়ে ব্যবহার করবে। তাদেরকে খাতা এবং পেন্সিল/ কলম দিয়ে বসিয়ে দিন, প্রথম দিকে ইচ্ছেমত লিখতে বলুন, পরে আপনার দেয়া টপিক অনুযায়ী লিখতে দিন, দেখুন কতটুকু পারে, না পারলে দেখিয়ে দিন। ছোট বাচ্চাদের জন্য খাতায় ডট এঁকে দিয়ে তারপর সেগুলো মিলিয়ে অক্ষর বা শব্দ বানাতে বলুন। অগোছালো অক্ষর লিখে তাদেরকে সিরিয়াল অনুযায়ী ট্রেস করতে বলুন। এভাবে অনেক ক্রিয়েটিভ আইডিয়া থেকে আপনার বাচ্চাকে লিখতে দিতে পারেন, এতে তারা বিনোদন পাওয়ার পাশাপাশি স্কুলের জন্য নিজেদেরকে ভালোভাবে প্রস্তুত করতে পারবে।

৬: গান শেখা

ছোটদের সাথে গান শোনার পাশাপাশি তাদের নিয়ে মাঝে মধ্যে গান গাইতে বসে যান। ইন্সট্রুমেন্ট থাকলে ভালো, না থাকলেও হাতের কাছে যা পান তাই ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ প্লেট, চামচ ইত্যাদি। ছোটরা এটা ভালোই এনজয় করবে। আর স্কুল গোয়িং বাচ্চাদের জন্য আপনি নিজে শেখানোর পাশাপাশি ইন্টারনেট থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে একটি ফরমাল ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা করতে পারেন এতে তাদের মিউজিক্যাল স্কিল ইম্প্রুভ হবে।

৭: ধর্মীয় শিক্ষা:

বাচ্চাদের স্কুল চলাকালীন সময়ে তখন বাবা মায়ের সাথে সময় কাটাতে হয় কম এতে করে ধর্মীয় অনেক জ্ঞান আছে যা , জানা থেকে বিরত থেকে,এখন তারা অনেকটা সময় বাসায় থাকতে পারছে,সুতরাং তাদের সাথে নৈতিক ও ধর্মীয় কিছু রীতি নীতি অনুসরণ জন্য অবগত করতে পারেন। নিজ নিজ ধর্ম মোতাবেক তাদের প্রতিদিন সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করা জন্য অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

Tarokaloy ২৬/০৯/২০২০ রিয়া

Previous ArticleNext Article